ডেস্ক রিপোর্ট :

রমজানের শেষ দশক মানেই আত্মশুদ্ধির এক সুবর্ণ সুযোগ। এই দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রজনী। তবে বিশেষভাবে ২১ রমজানের তারাবির রাত থেকেই শবে কদরের অনুসন্ধান শুরু হয়।
শবে কদর, যা কুরআনের ভাষায় “লাইলাতুল কদর”, এমন এক রাত যখন মানবজাতির ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়। কুরআনে বলা হয়েছে, “শবে কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম” (সূরা কদর: ৩)। অর্থাৎ এই রাতের ইবাদত, দোয়া ও প্রার্থনার ফজিলত হাজার মাসের ইবাদতের সমান বা তার চেয়েও বেশি।
শবে কদরের ফজিলত
শবে কদরের সবচেয়ে বড় নেয়ামত হলো কুরআনুল কারিমের অবতরণ। মহান আল্লাহ বলেন—
”আমরা একে (কুরআন) নাযিল করেছি কদরের রাতে।” (সূরা কদর: ১)
এই রাতে ফেরেশতারা দুনিয়াতে নেমে আসেন, আল্লাহর রহমতের দরজা উন্মুক্ত থাকে, গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়। নবী করিম (সা.) বলেছেন—
”যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াবের আশায় শবে কদরে ইবাদত করবে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (বুখারি, মুসলিম)
কী করা উচিত এই রাতে?
শবে কদরের বরকত লাভের জন্য আমাদের উচিত—
১. নামাজ ও কুরআন তিলাওয়াত: নফল নামাজ, বিশেষ করে তাহাজ্জুদ পড়া এবং কুরআন তিলাওয়াত করা।
2. দোয়া ও ইস্তেগফার: রাসুলুল্লাহ (সা.) এ রাতে বেশি বেশি এই দোয়া পড়তে বলেছেন—
”আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি” (হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করুন)।
3. সদকা ও দান: এই রাতে দান-সদকার সওয়াব বহুগুণ বেড়ে যায়।
4. নিজ ও পরিবারের জন্য দোয়া: এই মহিমান্বিত রাত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও সমগ্র উম্মাহর জন্য দোয়ার শ্রেষ্ঠ সময়।
শবে কদরের সন্ধান ও গুরুত্ব
হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন—
”তোমরা শবে কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ করো।” (বুখারি, মুসলিম)
অনেক আলেমের মতে, ২৭তম রমজানের রাতেই শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে আমাদের উচিত পুরো শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে ইবাদতে মনোযোগী হওয়া।
শেষ কথা
শবে কদর আমাদের জন্য এক অসীম রহমতের রাত। এই রাতের ইবাদত ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারি, নেক আমল বৃদ্ধি করতে পারি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। তাই আসুন, এই বরকতময় রাতে ইবাদত, তাওবা ও দোয়ার মাধ্যমে নিজেদের আত্মশুদ্ধির পথে এগিয়ে নিই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শবে কদরের পূর্ণ বরকত ও রহমত দান করুন—আমিন।