নিজেস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর—যাকে অনেকে “পপ সম্রাট” নামে চেনেন—তার জীবনের গল্প শুধু সঙ্গীতেই সীমাবদ্ধ নয়। জীবনের শুরুতে ক্রিকেটার হওয়ার প্রবল স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু নিয়তির মোড় ঘুরে তাকে এনে দেয় অন্য মঞ্চে, গান গেয়ে মানুষের হৃদয় জয় করার অবারিত সুযোগ। আর আজ আবার সেই ক্রিকেট অঙ্গনের সঙ্গেই যুক্ত হলেন তিনি, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক হিসেবে।
শৈশব ও ক্রিকেটের প্রতি টান :
কুমিল্লায় জন্ম নেওয়া আসিফ শৈশব থেকেই খেলাধুলার প্রতি প্রবল আগ্রহী ছিলেন। বিশেষ করে ক্রিকেটে নিজেকে গড়তে চেয়েছিলেন তিনি। বয়সের একপর্যায়ে ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নেওয়ার স্বপ্নও দেখেছিলেন। অনুশীলন, খেলায় অংশগ্রহণ—সবই চলছিল নিয়মিত। কিন্তু ভাগ্যের লেখায় ভিন্ন কিছু অপেক্ষা করছিল তার জন্য।
সঙ্গীতে আগমন ও তারকাখ্যাতি :
ক্রিকেটের স্বপ্ন একসময় দূরে সরে গেলে সঙ্গীতের জগতে পা রাখেন আসিফ। ২০০১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ও প্রিয়া তুমি কোথায় প্রকাশিত হয় এবং মুহূর্তেই আলোচনায় আসেন তিনি। সেই অ্যালবাম ভাঙে দেশের অ্যালবাম বিক্রির রেকর্ড। একের পর এক হিট গান, মিক্স অ্যালবাম ও স্টেজ শো তাকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। বাংলাদেশের শ্রোতারা তাকে শুধু গায়ক নয়, এক ধরনের অনুভূতির প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করেন।
জনপ্রিয়তার ভিন্ন মাত্রা :
গান দিয়ে কোটি ভক্তের ভালোবাসা অর্জনের পাশাপাশি বিতর্কেও ছিলেন আসিফ আকবর। তবে প্রতিবারই তিনি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন এবং ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন পেরিয়ে আবারও দৃঢ়ভাবে ফিরে এসেছেন। তার ব্যক্তিত্ব ও সাহসী অবস্থান অনেককে অনুপ্রাণিত করেছে।
আবার ক্রিকেটে ফেরা :
সঙ্গীতজীবনের শীর্ষে থেকেও ক্রিকেটের প্রতি টান কখনও কাটেনি তার। হয়তো সেই আবেগই তাকে আবার নিয়ে এল ক্রিকেট প্রশাসনের দায়িত্বে। সাম্প্রতিক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন আসিফ আকবর। অর্থাৎ শৈশবের স্বপ্নের ক্রিকেটকেই এবার তিনি নতুনভাবে ছুঁতে চলেছেন, তবে ব্যাট-বল হাতে নয়, বরং নীতিনির্ধারণী আসনে বসে।
আসিফ আকবরের জীবন প্রমাণ করে যে, মানুষ মন থেকে কিছু চাইলে তা কোনো না কোনোভাবে পূরণ হয়ই। তিনি চেয়েছিলেন ক্রিকেটে কিছু করতে, ভাগ্য তাকে দিয়েছে সঙ্গীতে সাফল্যের শিখর। আর এখন সেই ক্রিকেটের সঙ্গেই তাকে যুক্ত করেছে নতুন ভূমিকায়। একসময়ের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নবাজ তরুণ আজ দেশের ক্রিকেটের অন্যতম নীতিনির্ধারক—এ যেন জীবনের পূর্ণ চক্র।